মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে শোডাউনের প্রস্তুতি শেষ সিলেট বিএনপি’র। দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক লোক সমাগমের পর আজ আবার ‘সিলেট মুক্ত দিবস’ নিয়ে শোডাউন করতে যাচ্ছে দলটি। ভেতরে ভেতরে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
অনুষ্ঠানে প্রধান হিসেবে উপস্থিত থাকছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর আয়োজনের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপি নেতা ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট বিএনপি’র একাংশের নিয়ন্ত্রক। দলের ভেতরেও রয়েছে তার শক্তিশালী অবস্থান। এরপরও সার্বিক ভাবে সিলেট বিএনপির কর্তৃত্ব তার হাতে নেই।
দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন; সিলেট বিএনপির এক সময়ের অভিভাবক এমএ হকের মৃত্যুর পর আরিফুল হক চৌধুরী এসেছেন ফ্রন্টলাইনে।
দলের পদবঞ্চিত ও অবহেলিত নেতারা এখন তার কাছে আশ্রয়প্রার্থী। আর আরিফও তাদের ফিরিয়ে দেন না। কখনো কখনো নিজেই হয়ে ওঠেন প্রতিবাদী।
সিলেটের অবস্থান করা কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাও রয়েছেন তার সঙ্গে। এরপরও একক কর্তৃত্ব না থাকায় আরিফ সিলেটে তার অবস্থান ‘সুসংহত’ করতে পারছেন না। সহযোগী হিসেবেই তাকে থাকতে হচ্ছে।
কিন্তু এবার আরিফের হাতে এসেছে সেই সুযোগ। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বছরখানেক আগেই সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন সিলেট বিভাগীয় কমিটি’ গঠন করেছিল। আর এতে সদস্য সচিব করা হয় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবনকে।
সিলেট মুক্ত হয়েছে ১৫ই ডিসেম্বর। এ দিনই বিএনপির তরফ থেকে সিলেট মুক্ত দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সময় কম থাকার কারণে সেটি করা যায়নি।
এ কারণে আজ শনিবার সিলেট মুক্ত দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উদযাপন কমিটির নেতারা জানিয়েছেন; সিলেট মুক্ত দিবস আলোচনায় প্রধান অতিথি থাকবেন মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা (অব.) মেজর হাফিজ উদ্দিন (বীর বিক্রম), সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
অনুষ্ঠানের আয়োজক ও সিলেটের মেয়র মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন, ‘সিলেট মুক্ত দিবস ১৫ই ডিসেম্বর আমরা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারণে পারিনি। আজ করছি। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে। নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠে বিকালে এই অনুষ্ঠান হবে।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট মুক্ত হওয়ার পেছনে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান রয়েছে। ওই সময় তার সঙ্গে রণাঙ্গনের যোদ্ধা ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব.) মেজর হাফিজ উদ্দিন (বীরবিক্রম)। তার মুখ থেকেই আমরা সিলেট মুক্ত হওয়ার গল্প শুনবো।
এ কারণে অনুষ্ঠানটি ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করেন মেয়র আরিফ।’ এদিকে সিলেট মুক্ত দিবসের এই আলোচনায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি সিলেট বিভাগের বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
বিভাগের অপর তিন জেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা এসে শরিক হবেন। যেহেতু দলের মহাসচিব আসছেন এ কারণে বিএনপির তরফ থেকেও ভেতরে ভেতরে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
ইতিমধ্যে সিলেট নগরীসহ জেলা ও উপজেলাগুলোতে পোস্টারিং করা হয়েছে। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
দলের চেয়ারম্যানের মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের মতো এই সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম হবে বলে মনে করেন দলের নেতারা। তারা জানিয়েছেন; মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস নিয়ে যেহেতু এই আয়োজন সে কারণে সবার অংশগ্রহণ থাকবে।
সিলেটে মহাসচিবে উপস্থিতি সিলেট বিএনপিকে আরও গতিশীল করবে। এতে করে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা আরও উজ্জীবিত হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবে বলে জানান তারা।