আর্কাইভ | ঢাকা, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ৪ জিলহজ্ব ১৪৪৬ ০৬:১৪:৪৪ অপরাহ্ন
Photo
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
২৯ মে ২০২৫
১২:১০:০৩ অপরাহ্ন

ভারত মুসলিমদের দেশ, এখানে ইসলামিক ঐতিহ্য খুবই শক্তিশালী:ওয়াইসি


অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর প্রধান ও হায়দরাবাদ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পাকিস্তানের ইসলামনির্ভর প্রচারণার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ভারতে ২৪ কোটি গর্বিত মুসলমান বাস করেন। আমাদের ইসলামিক স্কলাররা বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে অনেক বেশি জ্ঞানী এবং তারা আরবি ভাষায় দক্ষতায় অনন্য।

 বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সৌদি আরবে এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এনডিটিভির। 

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কথা বলার সময় আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, পাকিস্তান বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে আরব ও মুসলিম বিশ্বের কাছে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে যে, তারা মুসলিম দেশ, কিন্তু ভারত নয়। এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। ভারত মুসলিমদের দেশ এবং এখানে ইসলামিক ঐতিহ্য খুবই শক্তিশালী।

ওয়াইসি আরও বলেন, পাকিস্তান যদি জঙ্গি সংগঠনগুলোর পেছনে সমর্থন বন্ধ করে, তাহলে গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।


তিনি ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ ও পেহেলগাম হামলার পর পাল্টা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরে বলেন, “৯ মে তাদের ৯টি বিমানঘাঁটি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ভারত চাইলে এসব ঘাঁটিকে ধ্বংস করে দিতে পারত, কিন্তু আমরা শুধু তাদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলাম— এই পথে আমাদের বাধ্য করবেন না।”

ওয়াইসি জানান, “এই হামলায় নিহত সন্ত্রাসীদের জানাজার ইমামতি করেছেন একজন ব্যক্তি যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হিসেবে তালিকাভুক্ত।”

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, পাকিস্তানকে আবার এফএটিএফ (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স)-এর ধূসর লিস্টে ফিরিয়ে আনতে হবে। একমাত্র সন্ত্রাসে অর্থ জোগান বন্ধ করেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।


তিনি বলেন, “যখন পাকিস্তানে ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়, তখন তার পাশে বসে ছিলেন মার্কিন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মোহাম্মদ এহসান। তার সঙ্গে করমর্দনের ছবিও রয়েছে। এটি প্রমাণ করে, পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে এসব জঙ্গি গোষ্ঠীর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।”

মুম্বাই হামলার প্রসঙ্গে ওয়াইসি বলেন, ২০০৮ সালের ২৬/১১ হামলার পর আমাদের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বে ভারতীয় তদন্তকারী দল পাকিস্তানে গিয়ে সব প্রমাণ দিয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শুধু তখন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছিল, যখন এফএটিএফ তাদের ধূসর তালিকাভুক্ত করেছিল।

তিনি বলেন, এক পর্যায়ে পাকিস্তান এফএটিএফকে জানায়, সাজিদ মির মৃত। পরে এফএটিএফ –এর বৈঠকে পাকিস্তানই জানায়, সাজিদ মির জীবিত এবং তাকে ৫–১০ বছরের জন্য অর্থপাচার মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। অথচ সন্ত্রাসের দায়ে নয়।

ভারতীয় সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে ওয়াইসি বলেন, আমাদের বিচারব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ করেছে। আজমল কাসাবকে গ্রেফতার করে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।


তিনি জানান, ২৬/১১ হামলার সময় পাকিস্তানে বসে থাকা জঙ্গিরা কাসাব ও অন্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল এবং বলছিল— ‘হতাশ হয়ো না, যত বেশি পারো ভারতীয়দের হত্যা করো, তাহলে জান্নাত পাবে।’

ভারতের এই বৈদেশিক প্রচার অভিযানে ওয়াইসি ছাড়াও ছিলেন বিজেপি সাংসদ বিজয়ন্ত পাণ্ডা, নিশিকান্ত দুবে, ফাংনোন কোন্যাক, রেখা শর্মা, মনোনীত সাংসদ সত্যনাম সিং সন্দু এবং ভারতের প্রাক্তন কূটনীতিক হর্ষ শ্রিংলা। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী বার্তা পৌঁছে দিতে ভারতের এই প্রতিনিধি দল সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন ও আলজেরিয়া সফর করছে।