# চাকরি ফিরে পেতে চান কর্মকর্তারা #
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি এ কে এম গাউছ মহীউদ্দিন আহমেদ এখনো পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এমডি পদে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। নিয়োগ পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েও মেধা তালিকার শীর্ষকে ডিঙ্গিয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে বিশেষভাবে ম্যানেজ করে পিজিসিবির এমডি পদটি ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন তিনি ভোল পাল্টিয়ে বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে সখ্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
পাওয়ার গ্রিডের দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি লিখিত আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । এতে বলা হয়েছে, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি (পাওয়ার গ্রিড) বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এর অধীন একমাত্র বিদ্যুৎ সঞ্চালন সংস্থা হিসাবে সফলভাবে গত প্রায় তিন দশক যাবৎ বাংলাদেশের বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড এর বিনির্মাণ এবং সংরক্ষণের কাজ সফলভাবে করে আসছে। এখানকার কর্মকর্তাদের সততা, নিষ্ঠা এবং কর্মতৎপরতার দৃষ্টান্ত বিদ্যুৎ বিভাগের মধ্যে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে যাহা সুধী মহলে খুবই প্রসংসিত।
তথাপিও সারা দেশের ন্যায় গত ১৫ বছরে স্বৈরাচারী সরকারের কালো থাবা হতে সংস্থাটি রেহাই পায়নি। বিগত স্বৈরশাসনের আমলে সরকার কর্তৃক নিয়োজিত পাওয়ার গ্রিডের বোর্ডের পরিচালকগন নানা রকম অপকর্ম, আর্থিক লুটপাট, অবৈধ নিয়োগ এবং প্রদোন্নতি বাস্তবায়ন করে গেছেন। যাহা দেশের বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের পরিচালন সংস্থা এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি সংস্থা হিসেবে মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়। সংগঠিত এসকল অন্যায়, অবিচার, জুলুম, অবৈধ নিয়োগ- পদন্নোতি, চাকুরিচুত্যির মত জঘন্য কাজকে এখনই প্রতিহত করে দেশপ্রেমিক ছাত্র জনতার বিজয়ের এই দিনের জন্য সুন্দর, সাবলীল, পরিচ্ছন্ন চড়বিৎ এৎরফ বিনির্মাণ করতে হবে। সে লক্ষ্যে চপাওয়ার গ্রিডের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া কিছু জুলুম-অত্যাচারের সারসংক্ষেপ এবং প্রস্তাব উপস্থাপিত হল :
স্বৈরাচারী হাসিনার দোসর চড়বিৎ এৎরফ এর বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (সাবেক অবৈধ এমপি, জামালপুর-৫ ও তৎকালীন মুখ্য সচিব) এর একতড়ফা নেতৃত্বে কোনো রকম কারিগরি গবেষণা ব্যতিরেকে বোর্ড সভায় বিবিধ আলোচনায় উত্থাপন করে পাওয়ার গ্রিডের সকল সঞ্চালন লাইনে কনভেনশনাল কন্ডাক্টর ব্যবহারের পরিবর্তে প্রায় দ্বিগুণ মূল্যের (Aluminum Conductor Composite Core (ACCC)ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ফলে গত ০৮ বছরে উক্ত কন্ডাক্টর ব্যবহার করার মাধ্যমে দেশের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট করা হয়েছে। আর উক্ত অর্থ স্বৈরাচারী হাসিনার চিহ্নিত দালালরা পাচার করে নিয়ে গেছে।
পাওয়ার গ্রিড এর বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে.এম গাউছ মহীউদ্দিন পাওয়ার গ্রিড এর বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল সমিতির প্রেসিডেন্ট। সর্বশেষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি মেধা তালিকায় প্রথম না হয়ে এবং পাওয়ার গ্রিড এর বোর্ড পর্ষদ কর্তৃক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে সুপারিশ প্রাপ্ত না হয়েও তৎকালীন সাবেক বিদুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সাথে বড় ধরনের আর্থিক লেনদেন করে হাসিনার সৈনিক পরিচয়ে মন্ত্রনালয়ের কারসাজির মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হন। আজকের এই পরিবর্তনের দিনে আমরা হাসিনার এসকল দোসর মুক্ত পাওয়ার গ্রিড দেখতে চাই।
পাওয়ার গ্রিডের বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল সমিতির সভাপতি এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.কে.এম গাউছ মহীউদ্দিন তার চিহ্নিত লোকজন অবৈধ সরকারের সাবেক সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর কেরাণীগঞ্জের হাউজিং এর উপর হতে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন অপসারন করে আন্ডারগ্রাউন্ড করার লক্ষ্যে চড়বিৎ এৎরফ এর সংশ্লিষ্ট কারিগরী টিমের বাধাকে উপেক্ষা করে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকল্পনা কমিশন হতে প্রকল্পের পিডিপিপি অনুমোদন করিয়ে নেয়। সরকারের আর্থিক অপচয় রোধে দ্রুত এই প্রকল্পকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা প্রয়োজন।
পাওয়ার গ্রিড কর্তক Optical Fiber Commercial Leasing সৃষ্টি এবং লোকবল নিয়োগ করে উক্ত দপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ব্যান্ডউইথ ট্রান্সমিশন ক্যাপাসিটি প্রস্তুতকরা সত্ত্বেও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোসররা প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশন লিমিটেড এবং ফাইবার অ্যাট হোম নামক প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক সুবিধা প্রদানের জন্য শেষ মুহূর্তে খুনি হাসিনার মুখ্য সচিব জনাব কায়কাউস আহমেদ এবং সামিট গ্রুপের এডভাইজার সেই সাবেক অবৈধ এমপির পিজিসিবির ব্যান্ডউইথ লিজিং এর ভাড়া প্রদানের কার্যক্রমটি বোর্ড সভার মাধ্যমে স্থগিত করে দেয়। ছাত্র জনতার বিজয়ের এই দিনে আমরা সেই স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর যথাযথ বিচার এবং সরকারি উক্ত প্রকল্পের ফলাফল হিসাবে জনগণকে কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
পাওয়ার গ্রিডের তৎকালীন বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (মুখ্য সচিব) এবং তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক (এইচআরএম) জনাব মোহাম্মদ শফিকুল্লাহ (অতিরিক্ত সচিব) এর সময়কালে সার্ভিস রুলকে চরমভাবে অমান্য করে ছাত্রলীগের কর্মীদের ভুয়া অভজ্ঞিতার সার্টিফিকেট তৈরী করে তাদের চাটুকার কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া এবং দলীয় কর্মী ববিচেনায় পদোন্নতি প্রদাণ করা হয়ছে। এসকল বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মী বিবেচেনায় নিয়োগের পথ সুগম করা এবং নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্য পাওয়ার গ্রিড কর্তৃক সম্প্রতি গঠিত নিয়োগসেলের মাধ্যমে নিয়োগ কার্য সম্পাদন না করে; পূর্বের ন্যায় বুয়েট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে নিয়োগ কাজ সম্পন্ন করা উচিত।
পাওয়ার গ্রিডের বোর্ডের তখনকার অবৈধ বোর্ড চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (মুখ্য সচিব) এবং তৎকালীন কিছু চাটুকার কর্মকর্তা (যারা আজও স্বৈরাচারী হাসিনার গোলাম পরিচয়ে কর্মরত রয়েছে) এর দেশ বিরোধী এসকল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় ইতোপূর্বে অনৈতিক এবং আইন বহির্ভূত ভাবে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে রাজাকারের সন্তান ট্যাগ লাগিয়ে কোম্পানির চাকুরি হতে ছাটাই করা হয়। এমন কি সেসময় এ সকল কর্মকর্তারা আদালতের দ্বারস্থ হলে সেখানেও তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে অবৈধ সরকারের এনএসআই সহ অন্যান্য গোয়েন্দা বিভাগের মাধ্যমে দেশ প্রেমিক এসকল অফিসারদেরকে দেশদ্রোহী, জঙ্গী-গোষ্ঠী বানিয়ে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সর্বোচ্চ আইনজীবী এটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে তাদেরকে স্থায়ীভাবে চাকুরীচুত্য করে। আজকে দেশ প্রেমিক ছাত্র-জনতার বিজয়ের এই দিনে আমরা দেশের জন্য ত্যাগী এসকল অফিসারদের চাকুরীতে ফিরে পেতে চাই।