বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির মতো গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাউফল উপজেলায় অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশের জনগণ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যসহ সকল কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষের পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন অতিবাহিত করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ দেশে বিদ্যুৎ বিলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনগণের সাথে প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়। অবিলম্বে দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে চলতি সময়ে বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির মতো গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন।
তিনি বলেন, জামায়াত গণমানুষের সংগঠন, এজন্য আমরা জনগণের স্বার্থে সকল ন্যায্য অধিকার আদায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াত জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ জামায়াতের চিন্তাধারায় ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয় বলেই জনগণের চরম দুর্দিনে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত গণবিরোধী এবং অবিবেচনামূলক। প্রতি মাসে দাম সন্বয়ের নামে প্রকারান্তরে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হবে, যা জনগণের সাথে চোর-পুলিশ খেলা। অবিলম্বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সরকারি 'গণবিরোধী' সিদ্ধান্ত বাতিল করুন।
ড. মাসুদ বলেন, বাউফলের এখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষের দিকে তাঁকালে আমার চোখে পানি আসে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য যেমন আকাশছোঁয়া অন্যদিকে সংসারের দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলবে। অবিলম্বে জনস্বার্থে বিদ্যুতের বর্ধিত মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
এই জামায়াত নেতা বলেন, সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি, ভ্রান্ত নীতির ফলে দেশের অর্থনীতিতে এবং জনজীবনে তীব্র সংকট চলছে। চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ সব দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন যখন নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় যখন লাগামহীনভাবে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যখন মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হচ্ছে, কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে, তখন সরকারের এই তুঘলকি সিদ্ধান্ত মরার ওপর খাঁড়ার ঘা ছাড়া কিছু নয়। বর্তমান বাংলাদেশে মানবদরদি হিসেবে পরিচিত আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের সেবা সহযোগিতা করার সুযোগ দিন। দেশের অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অতীতে ছিলো, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, দোয়া চাই, আগামী দিনে যেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আপামর জনসাধারণের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকতে পারি। আল্লাহ যেন এই জনগণের প্রত্যাশা কবুল করেন। বাউফল উপজেলার মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এসময় তিনি বাউফলের অসহায় মানুষের পাশে সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পটুয়াখালী জেলার আমীর অধ্যাপক শাহ আলম, বাউফল উপজেলা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, বাউফল উপজেলা সেক্রেটারি খালিদুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মুন্তাসির মুজাহিদ, পটুয়াখালী জেলা সভাপতি মাহাদী হাসান নাহিদ, ইসলামী ছাত্রশিবির বাউফল উত্তরের সভাপতি মো. লিমন হোসাইন, বাউফল পূর্ব সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বাউফল পশ্চিম সভাপতি হাফেজ আরিফুর রহমান, কামরুল ইসলামসহ প্রমূখ।