ছোট্ট একটি দ্বীপ। চারপাশে দিগন্তহীন নীল জলরাশির ঢেউ। এমন এক দ্বীপের বাসিন্দা কেবল এক নারী।
তার সঙ্গী কেবল প্রকৃতি, দ্বীপের সবুজ গাছ আর সৈকতে ভেসে আসা কচ্ছপ, কাঁকড়ার মতো সামুদ্রিক প্রাণীরা।
তবে মাঝেমধ্যে ঝড়ে পড়লে নাবিক, পর্যটক ও লাইটহাউস অপারেটরদের অনেকেই এই দ্বীপে আশ্রয় নেন।
এভাবেই এক, দুদিন নয় গত এক বছর ধরে ওই দ্বীপে বসবাস করছেন কিম সিন ইওল নামের ওই নারী। তবে এর আগেও যে খুব একটা কোলাহলের মধ্যে ছিলেন তিনি তাও নয়।
দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে এই দ্বীপেই ছিল তার আবাস। এই দম্পতি ভিন্ন দ্বীপটিতে আর কোনো মানুষের চিহ্ন ছিল।
১৯৯১ সাল থেকে স্বামীসহ এই দ্বীপে আসেন কিম সিন ইওল। ২০১৮ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর একাই এই দ্বীপের বাসিন্দা কিম।
দ্বীপটি দক্ষিণ কোরিয়ার অধীন হলেও এর জলরাশি জাপানের অর্ন্তগত।
সে কারণে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া দুটি ভিন্ন নামে ডাকে দ্বীপটিকে। জাপান একে তাকেশিমা আর কোরিয়রা একে বলে ডোকডো দ্বীপ।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে দ্বীপটি লিয়ানকোর্টস রক নামে পরিচিত।
একসময় ডুবরি হিসেবে কাজ করতেন কিম। ২০১৭ পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে ডুব দিতে পারতেন তিনি।
তবে বর্তমানে বয়সের ভাড়ে এ কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন কিম।
একা একা দ্বীপে কীভাবে থাকেন এমন প্রশ্নে কিম পর্যটকদের জানান, একা ভালোই আছি। মাছ ধরেই সময়টা বেশি কাটে। তবে ছেলে ও ছেলের বউকে সঙ্গে থাকলে ভালো লাগতো।
স্বামী মারা যাওয়ার পথ থেকে তারা মাঝেমধ্যে মাকে দেখতে আসেন জানিয়ে কিম বলেন, আমি চাই ওরাও এই দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে যাক। পর্যটকদের কাছে ডাকটিকিট, সাবান ও সি ফুড বিক্রি করেই জীবন চলে যাবে।
লিয়ানকোর্টস রক নামের দ্বীপটি সিওল থেকে ৪৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দ্বীপটি নিয়ে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ৩০০ বছর ধরে একটা বিবাদ চলমান।
এর মালিকানা দাবি করছে দুই দেশই। বর্তমানে দ্বীপটি দখলে নিয়ে একটি লাইটহাউস বসিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
তবে যে দেশই দাবি করুক, বাসিন্দা হিসেবে কিম সিন ইওল দ্বীপটির নিজের বলেই দাবি করেন।
প্রভাতী নিউজ / জি এস