জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত। আজ শনিবার সকাল সাড়ে সাতটায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য দোয়া করা হয়।
এই জামাতে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সঙ্গে এখানে নামাজ আদায় করেছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ।
এই ঈদের জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন কারি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
সাড়ে সাতটায় জামাত থাকলেও ঈদের নামাজ আদায় করতে মুসল্লিরা ভীড় জমাতে থাকেন সকাল সাড়ে ছয়টা থেকেই। সব শ্রেণির মানুষ সেখানে সব ভেদাভেদ ভুলে নামাজ আদায় করেছেন।
নামাজ শেষে খুতবা পড়া হয়। এরপর মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি, ও নাগরিকদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়। এই দোয়ায় ফিলিস্তিনসহ মুসলিম জাহানের শান্তির প্রার্থনাও করা হয়।
এবারের ঈদের জামাতে জাতীয় ঈদগাহে ৩৫ হাজারের কাছাকাছি মুসল্লির ঈদের নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। সঙ্গে ভিআইপি ব্লকে ছিল ২৫০ জনের নামাজের ব্যবস্থা। এই জামাতে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। এই জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেখানে উপস্থিত ছিল পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
দেশের মঙ্গলে সবার দোয়া চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
দেশের মঙ্গল কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (৭ জুন) জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাইকে আজকে একসঙ্গে ঈদের জামাতে পেলাম। সবাইকে ঈদ মোবারক জানালাম। সবাই এ পবিত্র দিনে দেশের মঙ্গলের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঈদ জামাতে অংশ নেন প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
শোলাকিয়ায় ঈদগাহ ময়দান লাখো মুসল্লির ঢল
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাতে মুসল্লিদের ঢল নামে। শনিবার (৭ জুন) সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ দিকে জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ছিল দুই প্লাটুন বিজিবি।
এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন ঈদগাহের দিকে। প্রতি বছর ঈদের জামাতে এখানে লাখো লাখো মানুষের ঢল নামে। বড় জামাতে নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় তাই এখানে প্রতি বছর ঈদের জামাতে অংশ নেয় মুসল্লি।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য রয়েছে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে দুটি ট্রেন। যা চলে ভৈরব-ময়মনসিংহ রোডে।
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) মোহা. কাজেম উদ্দিন জানান, ঈদুল আজহায় জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজাবে রহমত বলেন, ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব ব্যবস্থায় নেওয়া হয়। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করছে দুটি বিশেষ ট্রেন।