২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও বিচার উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা জানান তিনি।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনার এক পর্যায়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে। তবে, নির্বাচন দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো ফ্যাক্টর আছে বলে মনে করেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের জন্য অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য সার্চ কমিটি লাগবে। সার্চ কমিটি করতে হলে পিএসসির চেয়ারম্যান লাগবে। সেটার নিয়োগ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রথম কাজ হবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। সঠিক ভোটার তালিকা করতে হবে। নির্বাচনের জন্য এসব ধাপ চিন্তা করতে হবে। কিছুদিনের মধ্যে সার্চ কমিটি হবে। এরপর নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।
তিনি বলেন, আপনি নিশ্চয় ভুয়া নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন করা হোক, সেটা চান না। নিশ্চয়ই কেউ চায়নি হাবিবুল আউয়াল কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেবে। এটা কেউ কল্পনাও করতে পারে না।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার পর প্রথম কাজ হবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। ফ্যাসিস্ট সরকার ২০২৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের ভোটার তালিকা নিয়ে ব্যাপক অরাজকতা করেছিল। হয়তো ভয় ছিল নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে কী অবস্থা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ছাড়া এই ভোটার তালিকা তৈরির আদেশ কেউ দিতে পারে না। প্রধান উপদেষ্টার আদেশে ভোটার তালিকা হবে না। নির্বাচন কমিশনের আদেশে হবে।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও বিভিন্ন প্রসঙ্গে ওঠা প্রশ্নের জবাব দেন ড. আসিফ নজরুল। যেমন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভারত এই চুক্তি মানলে তাদের শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। এই চুক্তি সঠিকভাবে মানলে তারা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না বলেও জানান আইন ও বিচার উপদেষ্টা। এ ছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হলে কোনো সাংবাদিকের বিচার হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
ঢালাও মামলা দায়েরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, বিগত সরকারের সহযোগিতায় গায়েবি মামলা হতো। এগুলো পুলিশ করতো। মামলাগুলো তৎকালীন বিরোধীদলের লোকদের বিরুদ্ধে হতো। এখন হচ্ছে ঢালাও মামলা। যারা পূর্বে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তারাই এই মামলা করছেন। এই মামলাগুলোতে যাতে নিরাপরাধ লোক শাস্তি না পান, সে বিষয়ে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার আগ বাড়িয়ে কিছু করবে না। তবে তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি বড় হয়ে উঠেছে। জনপ্রত্যাশা তৈরি হলে নিষিদ্ধ করা হবে। তারা অতীতে কী কাজ করেছে তা সব গণমাধ্যমে এসেছে। দেশবাসী দেখেছে।
এ ছাড়া দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে আসিফ নজরুল বলেন, তরকারির এত দাম যে, বিক্রি কমে গেছে। বন্যার কারণে ডিমের সাপ্লাই কমে গেছে। গত সরকারের আমলে সব নিয়ন্ত্রণ হতো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। তবে এটুকু বলতে পারি, সামনে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে।