আর্কাইভ | ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬ ০৩:৫২:৩৩ অপরাহ্ন
Photo
এখন বাংলা ডেস্ক
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
১৬ মে ২০২৪
০৮:৪৬:৩৯ পূর্বাহ্ন

দুবাইয়ে গোপন সম্পদের তালিকায় ৩৯৪ বাংলাদেশি


বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। এ তালিকায় অন্তত ৩৯৪ বাংলাদেশির নাম রয়েছে। তাদের ৬৪১টি বাড়ি রয়েছে, যার মূল্য ২ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা।

সম্পত্তির মালিকের এ তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও বড় ব্যবসায়ী রয়েছেন। এমনকি বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি, অর্থ পাচারকারী এবং অপরাধীরাও বিপুল সম্পদের মালিক সেখানে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) এ তালিকা প্রকাশ করেছে একটি বৈশ্বিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্প। তালিকায় ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানির পাশাপাশি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।

তালিকায় দেখা গেছে, দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে ভারতীয়দের। সেখানে ২৯ হাজার ৭০০ ভারতীয় নাগরিক ৩৫ হাজার প্রপার্টির মালিক। পাকিস্তানিরা রয়েছে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে। দেশটির ১৭ হাজার নাগরিকের দুবাইয়ে ২৩ হাজার প্রপার্টি রয়েছে। এর বাজারমূল্য ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার।

তালিকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংবাদে যে মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বাংলাদেশিদের সংখ্যা, সম্পদের পরিমাণ এবং দাম রয়েছে। তাদের নিয়ে পৃথক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

‘দুবাই আনলকড’ শীর্ষক এ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা প্রকল্পের সমন্বয় করেছে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) ও নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোর। ৫৮টি দেশের ৭৪টি সংবাদমাধ্যম এ প্রকল্পে অংশ নিয়েছে। ওসিসিআরপির ওয়েবসাইটে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এ অনুসন্ধান চালানো হয়েছে দুবাইয়ের ভূমি দপ্তরসহ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের ফাঁস হওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে। এতে বিশেষ করে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের সম্পদের মালিকানার বিস্তারিত চিত্র ওঠে আসে।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ও সংঘাত নিয়ে গবেষণা করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। পরে এসব তথ্য-উপাত্ত ই-টোয়েন্টিফোর এবং ওসিসিআরপির সঙ্গে ভাগাভাগি করে প্রতিষ্ঠানটি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বসও এ অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় অংশ নেয়। সব মিলিয়ে ফোর্বস ২২ ধনকুবের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৬০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের ৭৬টি সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে। তারা বিশ্বের ৪টি মহাদেশের ১০টি দেশ থেকে এসেছেন।

ফোর্বসের প্রতিবেদনে শুরুতেই ভারতীয় ধনকুবের মুকেশ আম্বানির নাম রয়েছে। দুবাইয়ের পাম জুমেইরাহ কৃত্রিম দ্বীপে তার আনুমানিক ২৪ কোটি ডলারের সম্পদ রয়েছে। দেশটির আরেক নাগরিক এম এ ইউসুফ আলি ও তার পরিবারের পাম জুমেইরাহ, দুবাই মেরিনা ও ইন্টারন্যাশনাল সিটিতে সম্পদ রয়েছে ৭ কোটি ডলার মূল্যের।

মিসর, যুক্তরাজ্য, সাইপ্রাসের নাগরিকদেরও দুবাইয়ে সম্পদ রয়েছে। দুবাইয়ে গোপনে সম্পদ গড়া ব্যক্তিদের এ তালিকায় যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের অন্তত ৭ নাগরিকের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন রাজনৈতিক ও একজন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি।

পাকিস্তানের দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, দুবাইয়ে ১৭ হাজার পাকিস্তানি সম্পদের মালিক। তবে তথ্য-উপাত্ত ও অতিরিক্ত সূত্র ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ সংখ্যা ২২ হাজারের মতো।

এ তালিকায় প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, বাখতাওয়ার ভুট্টো জারদারি ও আসিফা ভুট্টো জারদারি; স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভির স্ত্রী মিসেস আশরাফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছেলে হুসাইন নওয়াজ এবং আলোচিত সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার ছেলে সাদ সিদ্দিক বাজওয়ারের নাম রয়েছে।

ডনের প্রতিবেদনে দেশটির সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফসহ বহু সাবেক জেনারেলের সম্পদ থাকার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।