আর্কাইভ | ঢাকা, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬ ০৮:৩৭:০২ অপরাহ্ন
Photo
এখন খবর ডেস্ক
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
৩১ জানুয়ারী ২০২৪
০৭:০০:৫৫ পূর্বাহ্ন

শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ 


ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে চার বছর আগে হাত হারানো শিশু নাঈম হাসানকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ লাখ টাকা করে ১০ বছর মেয়াদে দুটি ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে কারখানার মালিককে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটির পড়ালেখার খরচ হিসেবে প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা করে দিতে বলা হয়েছে। আর এই অর্থ দিতে হবে এইচএসসি পাশ করা পর্যন্ত। হাত হারানোর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিটের শুনানির পর আজ বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এমন সিদ্ধান্ত দেন।


আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অনীক আর হক ও মো. বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। ওয়ার্কশপের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম। 


রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। পরে অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, ১০ বছর পর মুনাফাসহ এই টাকা শিশুটি উত্তোলন করতে পারবে। চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে ১৫ লাখ ও ডিসেম্বরের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। আর বিষয়টি চলমান তদারকিতে থাকবে বলেছেন আদালত। নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে অগ্রগতি জানিয়ে তিন মাস পর পর আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।

আদেশের পর আদালত ওই শিশুকে বললেন, ‘ভালো করে পড়ালেখা করবে।’ নাঈম বলল, ‘অবশ্যই।’ আদালত বললেন, ‘আমি যখন বুড়ো হয়ে যাবো, এখানে থাকবো না, তখন এসে দেখা করো। বলিও পড়াশোনা করে কত দূর গিয়েছ।’ 

নাঈম জবাবে বলে, জি। আদালত বলেন, এসো, চকলেট নিয়ে যাও। এরপর শিশুটি এজলাসের কাছে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দার তার হাতে চকলেট তুলে দেন। তার আগে সকালে মা–বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে হাইকোর্টে আসে ১৩ বছর বয়সী নাঈম। 

ভৈরবে ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে হাত হারানোর ঘটনায় ২০২০ সালে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে নাঈমের বাবা কর্মহীন হয়ে পড়েন। ওই সময় বাধ্য হয়ে নাঈমকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপের কাজে দেন তার বাবা–মা। 

মালিকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তাকে দিয়ে চা এনে দেওয়ার কাজ করানো হবে। তবে পরবর্তীতে মালিক তাকে দিয়ে ড্রিল মেশিন চালানোর কাজও করান। কাজ করতে গিয়ে শিশুটির ডান হাত মেশিনে ঢুকে যায়। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে তা বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হয়। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। তাতে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। ওই রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত।