রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো জনগণ এবং দেশ: তারেক রহমান
আর্কাইভ | ঢাকা, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ১১ রমজান ১৪৪৬ ০১:৫৪:৪১ অপরাহ্ন
Photo
স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, প্রকাশিতঃ
১১ মার্চ ২০২৫
০৯:৩৫:১৯ পূর্বাহ্ন

রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো জনগণ এবং দেশ: তারেক রহমান


জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেছেন, আমরা জনগণকে ঘিরে রাজনীতি করি। আজকে দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। রাজনীতিকরা কেন এসব বিষয়ে বেশি বেশি ডিবেট করছেন না যে, আমি কীভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা সাজাবো? উৎপাদন কীভাবে বাড়ানো হবে? কেন এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না? জাতির সামনে এসব নিয়েও কথা বলা উচিত।


মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা গণতন্ত্র ও একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্য। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে।


তিনি বলেন, দেশের বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে সংস্কার। বিশেষ করে আমরা ছোট, বড়, মাঝারি সব রাজনৈতিক দল মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও একটি সুন্দর পরিবেশের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। প্রায় সব দল মিলে জাতির সামনে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা প্রণয়ন করেছি। যখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলেনওনি। আমরা স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলেছি।

আজকে অনেকেই অনেক কথা বলছেন সংস্কার নিয়ে। আমরা স্বাগত জানাই। তবে রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো জনগণ এবং দেশ। অবশ্যই সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এসব নিয়ে আলোচনা থাকবেই। বাংলাদেশে এক কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পরিবর্তে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হলে কী কী হবে এসব নিয়ে আলোচনা আছে। একজন ব্যক্তির দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়া নিয়ে কথা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়ে কথা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা জনগণকে ঘিরে রাজনীতি করি। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাদের সবার উচিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বেশি বেশি মতামত ব্যক্ত করা। আজকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে দেশের অধিকাংশ মানুষ কষ্ট যন্ত্রণায় রয়েছে। শুধু সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা এসব নিয়ে আলোচনা হলেই চলবে না।


তারেক রহমান বলেন, প্রায় ২০ কোটি মানুষের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কী হবে? বাজার ব্যবস্থা কী হবে? এসব নিয়ে কথা বলার নামও তো সংস্কার। শুধু নির্বাচনের সময় জাতীয় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বললেই কি সেটা সংস্কার? মানুষ যেন ন্যূনতম চিকিৎসা সুবিধা পায় সেটিও ভাবতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে হলে একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। এ বিষয়েও প্রতিটি দলের ডিবেট বা কর্মপরিকল্পনা থাকা উচিত। শিক্ষাব্যবস্থাকে কীভাবে দেখতে চাই, সেটিও সংস্কারের অংশ।

দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কৃষির উৎপাদন বাড়াতে হবে। ২০ কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থান করা ও চাহিদা মেটাতে হলে এটি করতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন খাল খননের মাধ্যমে কৃষকের যে জমিতে এক ফসল হতো সেখানে দুইবার ফসল ফলিয়েছেন, যেখানে দুইবার ফসল হতো সেখানে তিনবার ফসল ফলিয়েছেন, বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন, কৃষকের মেরুদণ্ড ধীরে ধীরে মজবুত করেছিলেন, এটিও তো অনেক বড় সংস্কার। আমাদের শিল্পন্নোয়নের কথা ভাবতে হবে। কিভাবে উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা দেওয়া যায় সে বিষয়েও চিন্তা করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এটিও কিন্তু অনেক বড় সংস্কার।


তারেক রহমান বলেন, আমি বহু বছর ধরে দেশের বাইরে। ঢাকা শহরসহ সারাদেশে পরিবেশ দূষণ তীব্রতর হচ্ছে। পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন। আমরা কি রাজনৈতিক দলগুলো এসব নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারি না? কিভাবে উন্নতি ঘটাতে পারি? দূষণ কমাতে পারি? আমি তো মনে এই দূষণ কমানোও সংস্কারের অংশ। কারণ, লাখ লাখ মানুষ দূষণের কারণে অসুস্থ হচ্ছে। দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারে।


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা কি ২০ কোটি মানুষের জন্য বিশুদ্ধ ব্যবহার্য পানি সরবরাহ করতে পারি? বিশ্বে জ্বালানি ও পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এসব নিয়ে কথা বলা ও কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরাও তো সংস্কারের অংশ। আমি সব রাজনীতিকদের অনুরোধ করবো- আসুন আমরা জনগণের এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলি, চিন্তা করি। আমাদের সমালোচনা থাকবে তবে জনগণের ইস্যুগুলোকে যেন ভুলে না যাই। তাহলে দেশের সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে যাবে। যা আমাদের কারও কাম্য নয়। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বসে জনগণের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে পারি, আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।