বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র তাণ্ডবে ৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল, বরগুনা, বাগেরহাট ও পিরোজপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দিনভর বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এসব এলাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফে অতিবৃষ্টিতে বাড়ির মাটির দেয়াল ধসে ঘুমন্ত অবস্থায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। আর ঝড়ো বাতাসে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে সারা দেশে তিনজন মারা গেছেন। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ রয়েছে ২০ ট্রলারসহ বরগুনার ৩০০ জেলে। গাছ উপড়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বহু এলাকা।
এদিকে ঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা বন্ধ করে দেয়া হয়। নদীপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
বরগুনা ও ভোলার মনপুরায় উত্তাল সাগরে দুটি ট্রলার এবং মোংলায় কয়লাবোঝাই একটি লাইটার জাহাজ ডুবে গেছে।
এর আগে শুক্রবার বিকাল ৪টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে। উপকূলে আঘাত হেনে এটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে মোংলা ও পায়রা বন্দরে দেয়া ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ দেয়া হয়। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরেও ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ দেয়া হয়।
অন্যদিকে হাতিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাসেদ সবুজ বলেন, প্রায় ২০ শতাংশ আমন ধান হেলে পড়েছে। মাঠে থাকা শীতকালীন সবজিরও ক্ষতি হতে পারে। তবে আমরা এখনো পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাইনি। বিস্তারিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে সময় লাগবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রচুর বাতাস হচ্ছে। আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যেতে পারছে না। বাতাস কমলে আমরা সেসব স্থানে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, যেসব স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলোর তালিকা সংগ্রহ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পেলে খুব শিগগিরই জানানো হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের ২৪ লাখ টাকা এবং ৪৭৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণের জন্য প্রস্তুত আছে। প্রায় ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। এছাড়াও ১০২টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত আছে। সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিজ নিজ স্টেশনে প্রস্তুত থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যে কোনো ঘটনা জানাতে আমাদের হটলাইন নম্বর চালু আছে।