
ফ্রান্স সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইমামতিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একইসঙ্গে এটিকে দেশটির কর্মসংস্থান সংস্থার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
খবর মিডল ইস্ট মনিটরের।
ফরাসি ইসলাম ফোরামের দ্বিতীয় সভার সমাপনী অধিবেশনে স্বীকৃতির তাৎপর্য তুলে ধরে এই ঘোষণা দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো। তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও মুসলিম ধর্মীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে সংলাপ আস্থা ও দায়িত্বের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক পদক্ষেপ, যেখানে প্রথমবারের মতো ফ্রান্সে ইমামের ভূমিকাকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়া হলো।
এ সময় তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, মুসলিমরা তাদের ধর্মকে চরমপন্থি ও বিকৃত মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত করতে চায় না এবং তারা বরাবর এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এসেছে।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় বলে নিশ্চিত করে রেতাইয়ো উল্লেখ করেন, প্রয়োজনে তারা সহায়তা প্রদান করতে পারেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ফ্রান্সে স্বীকৃত পেশার সরকারি তালিকায় ইমামের ভূমিকা আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইমামদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসংস্থান চুক্তি তৈরির ঘোষণা দেন, যা তাদের কাজের জন্য একটি কাঠামো প্রদান করবে।
রেতাইয়ো তার ভাষণে ফ্রান্সে ইসলামবিদ্বেষ সম্পর্কিত পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, ২০২৩ সালে ফ্রান্সে ১৭৩টি মুসলিমবিরোধী হামলার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ, অনেক ভুক্তভোগী এ ধরনের ঘটনার অভিযোগ জানাতে চান না বা জানাতে ভয় পান।
ফরাসি সরকার হাসপাতাল ও সামরিক বাহিনীতে কাজ করা মুসলিম ধর্মযাজকদের (চ্যাপলিন) আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এর ফলে মুসলিম চ্যাপলিনরা এখন থেকে ফরাসি জনসেবা (পাবলিক সার্ভিস) খাতের সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন। এর ফলে হাসপাতাল ও সামরিক বাহিনীতে মুসলিমদের ধর্মীয় আচার ও চর্চার জন্য আরও সুসংগঠিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।